Search This Blog

Monday, April 18, 2011

জৈবপ্রযুক্তির জয়জয়কার



গত শতাব্দীর পুরোটা জুড়েই ছিল চিকিসা পদার্থবিজ্ঞানের (মেডিক্যাল ফিজিঙ্) রাজত্ব। তবে একবিংশ শতাব্দীর প্রাক্কালে বলা হয়েছিল নতুন শতকে রাজত্ব করবে জেনেটিক বায়ো ইঞ্জিনিয়ারিং। আজ শতকের এক দশক পার হয়ে যাওয়ার পর দেখা যাচ্ছে ভবিষ্যদ্বাণীটি ফেলনা ছিল না। এর মধ্যে ২০১০ সাল যেন আবার জৈবপ্রযুক্তির উন্নয়নে বিশেষ এক মাইলফলক। জৈবপ্রযুক্তির সহায়তায় এখন কৃত্রিম কোষ, ফুসফুস, জরায়ু ইত্যাদি সবকিছু তৈরিই সম্ভব বলে মনে হচ্ছে।
সিন্থেটিক কোষ

মানব জিনের অন্যতম নকশা প্রণয়নকারী জে ক্রেইগ ভেন্টা এবার চান গবেষণাগারে কৃত্রিম উপায়ে কোষ তৈরি করতে। সে লক্ষ্যে তিনি বছর গিয়েছেনও বেশ কিছু দূর। ডিএনএ তৈরিতে যেসব উপাদান প্রয়োজন হয় সেগুলো সংগ্রহ করে আবার পুনর্গঠিত করার মাধ্যমে তিনি প্রস্তুত করতে যাচ্ছেন প্রথম সিন্থেটিক কোষ। ইতিমধ্যেই গবেষণাগারে বায়োফুয়েল হিসেবে ব্যবহারের জন্য তিনি কিছু কোষ তৈরি করেছেন। ছাড়া বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে তাঁর পদক্ষেপ কার্যকর হবে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।

কৃত্রিম জরায়ু
সন্তান-সন্ততিহীন দম্পতিদের জন্য আরেকটি সুখবর বয়ে নিয়ে এসেছে এই কৃত্রিম জরায়ু আবিষ্কারের সংবাদটি। অনেক সময় গর্ভাশয়ের ত্রুটির কারণে সন্তানধারণে অক্ষম থাকেন মা। সে ক্ষেত্রে ডিম্বাণু শুক্রাণুর মিলনের ফলে নিষিক্ত ডিম্বাণুকে ক্রমান্বয়ে অনুকূল পরিবেশের বাইরে বড় করে তোলা গেলেই সমস্যা কেটে যায়। পরিকল্পনা থেকেই মূলত কৃত্রিম জরায়ু প্রস্তুতের ভাবনা চিকিসকদের মাথায় আসে। ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়েছেন বছর; কিন্তু চূড়ান্ত সাফল্য পেতে আরো সময় লাগবে।

কৃত্রিম ফুসফুস
ধরা যাক, আপনার দেহের কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যেমন_ফুসফুস ঠিকভাবে কাজ করছে না। আপনি সেই ত্রুটিযুক্ত ফুসফুস বদলে দোকান থেকে নতুন আরেকটা সুস্থ ফুসফুস কিনে আনতে চান_এমন ঘটনা এত দিন কেবল বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীতেই সম্ভব ছিল। কিন্তু বাস্তবেও ঘটা অসম্ভব নয়। বছরই বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন ধরনের বায়োসেন্সর, স্টিমুলেশন সিস্টেম রক্ত চলাচলের জন্য ম্যাট্রিঙ্ আকারে পথ প্রবর্তন করে এমন এক যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন, যা কৃত্রিম উপায়ে ফুসফুসের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারদর্শী। এখন পর্যন্ত অবশ্য যন্ত্রটি কেবল ইঁদুরের ফুসফুস প্রতিস্থাপনে সফলতা দেখিয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে মানবদেহেও সাফল্যের সঙ্গে কাজ করবে যন্ত্র।

মশার মধ্যে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ
বিশ্বের অন্যতম বিরক্তিকর ভয়ংকর প্রাণীটির নাম মশা। এটির মাধ্যমে ছড়ানো ম্যালেরিয়াসহ বিভিন্ন প্রাণঘাতি রোগে মানুষ যথেষ্ট নাস্তানাবুদ হয়েছে। বোধকরি মানুষের সেদিন শেষ হতে চলল। অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদল বছর জৈবপ্রযুক্তি ব্যবহার করে মশার মধ্যে এমন এক ধরনের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা গড়ে তোলার খবরই দিয়েছেন। এর মাধ্যমে মশা নিজেই লড়াই করবে ম্যালেরিয়ার জীবাণুর মধ্যে। ফলে ম্যালেরিয়া জীবাণু আর মনুষ্যদেহে প্রবেশ করতে পারবে না। এখন অপেক্ষা কবে দেখা মিলবে ম্যালেরিয়াপ্রুফ মশার!

m~Z&ª: দৈনিক কালেরকন্ঠ (01/01/2011)

No comments:

Post a Comment