ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিস রিসার্চ বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) সম্প্রতি যক্ষ্মা বা টিবি রোগ শনাক্তকরণে উদ্ভাবিত একটি নতুন পদ্ধতির জন্য পেটেন্ট বা মেধাসত্ত্ব (ডিরেক্টর অব ইউনাইটেড স্টেটস পেটেন্ট অ্যান্ড ট্রেডমার্ক অফিস-ইউএস ৭৬৮৭১) লাভ করেছে, যা প্রতিষ্ঠানটির বিগত ৫০ বছরের গবেষণা ইতিহাসে প্রথম। এই গবেষণা কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ও নিউট্রিশনাল বায়োকেমিস্ট্রি গবেষণাগারের প্রধান ড. রুবহানা রকীব। বর্তমানে তাঁদের উদ্ভাবিত পদ্ধতি অ্যান্টিবডি প্রডিউসড বাই পেরিফেরাল ব্লাড লিম্ফোসাইটস ইন কালচার সুপারনাটান্ট বা এএলএস দিয়ে সফলভাবে টিবি শনাক্ত করা হচ্ছে। বিশেষ করে, আগে ফুসফুস ছাড়া দেহের অন্য কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যক্ষ্মা জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হলে সেটা শনাক্ত করার তেমন কোনো পরীক্ষা চিকিৎসকদের হাতে ছিল না। কিন্তু এ পদ্ধতি আবিষ্কারের কারণে এখন থেকে সে ধরনের তেমন কোনো প্রতিবন্ধকতা আর থাকল না। তা ছাড়া আক্রান্ত দেহ আগে থেকেই যক্ষ্মা রোগের প্রতিষেধক বিসিজি টিকা নিয়ে থাকলে প্রচলিত পদ্ধতিতে যক্ষ্মা পরীক্ষায় সেটা বিভ্রান্তির সৃষ্টি করত। বিপরীতে এএলএসে সে ধরনের আশঙ্কা নেই। অর্থাৎ সেদিক দিয়ে সুইডেনের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনকারী বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ড. রুবহানার এই আবিষ্কার নিঃসন্দেহে একটি মাইলফলক। এ নিয়ে কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, 'এটা একেবারেই আমাদের নিজস্ব আবিষ্কার। ফলে অনেক কম খরচে ও স্বল্পসময়ে (মাত্র দুই দিনে) আমাদের দেশের যক্ষ্মা আক্রান্ত রোগীর কাছে এ সেবা পেঁৗছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে, যা বাংলাদেশি হিসেবে আমার জন্য অত্যন্ত গর্বের।'
ড. রুবহানা আরো জানান, ভবিষ্যতে হয়তো এ পরীক্ষার প্রাপ্ত ফলাফল বায়োমার্কার হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে। নতুন এ পদ্ধতি নিয়ে দেশে-বিদেশে অনেকের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। আফ্রিকার ইথিওপিয়ায় কাজ হয়েছে, রুয়ান্ডায় কাজ চলছে। জাপানে কাজ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ২০১০ সালের শুরুতেই এমন একটি আবিষ্কারের সুসংবাদ দেওয়ার কারণে ড. রুবহানা রকীব ছিলেন বছরজুড়ে আমাদের দেশের অন্যতম আলোচিত ব্যক্তিত্ব।
No comments:
Post a Comment