মানব শরীরের রোগের বিভিন্ন উপসর্গের মধ্যে ব্যথা উলেস্নখযোগ্য। জোড়ার বিভিন্ন অসুবিধার মধ্যে কনুই ব্যথা একটি অন্যতম উপসর্গ। কনুই ব্যথার কারণঅনেক এবং ব্যথার উৎপত্তি স্থানের মাধ্যমে ব্যথার কারণ ও রোগ সম্পর্কে ধারনা করা যায়। বাহুর হাড়ের (হিউমেরাস) নীচের প্রান্তের বাহির অংশকে ল্যাটারালইপিকোনডাইল বলে। নিম্নবাহুর পিছনের পেশীগুলি এ স্থান থেকে উৎপত্তি হয় এবং এর প্রদাহকে ল্যাটারাল ইপিকোনডাইলাইটিস বা টেনিস এলবো বলে। কনুই ওহাতের কবজি বার বার পিছনে বাঁকা করলে ল্যাটারাল ইপিকোনডাইলাইটিস বা টেনিস এলবো হয়। ধারনা করা হতো, টেনিস খেলোয়ারদের ল্যাটারালইপিকোনডাইলাইটিস হয় তাই একে টেনিস এলবো বলে। কিন্তু কোন কারণ ছাড়াই যে কেউ ল্যাটারাল ইপিকোনডাইলাইটিস বা টেনিস এলবো-তে ভুগতে পারে। তবেহাতুড়ি ও স্ক্রু ড্রাইভার ব্যবহারকারী, পেইন্টার, কাঠুরে, টেনিস ও ব্যাডমিন্টন খেলোয়াদের এবং সাংসারিক কাজে ব্যস্ত এরকম মহিলাদের ল্যাটারালইপিকোনডাইলাইটিস (টেনিস এলবো) বেশী হয়। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের আথর্্রাইটিসের (যেমন-রিউমাটয়েড,গাউট) এবং ডায়াবেটিসের রোগীদের টেনিসএলবোতে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশী। এ রোগের কারণে কনুইর বাহির পাশ্বর্ে ব্যথা হয় এবং নিম্নবাহুর পিছন ও বাহির পাশর্্ব দিয়ে ব্যথা কবজি পর্যন্তযায়। হাত দিয়ে কিছু তুলতে সমস্যা হয়। ভিজা কাপড় নিংড়ানো, চামচ দিয়ে কিছু নাড়ানো ও দরজা খোলা কষ্টকর। এমনকি আরেক জনের সাথে করমর্দন করতেওঅসুবিধা হয়।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন ঃ
১ . হাত দিয়ে কোন কাজ বা কোন কিছু বহন করতে না পারলে। ২. রাতের বেলায় বা বিশ্রাম অবসহায় ব্যথা হলে। ৩. একটানা কিছু দিন ধরে কনুইয়ে ব্যথাথাকলে। ৪. কনুই সোজা বা ভাঁজ করতে অসুবিধা হলে। ৫. কনুই ফুলা বা কনুইর চামড়ার রং পরিবর্তন। ৬. অন্য কোন অস্বাভাবিক অসুবিধা বা চিহ্ন ।
চিকি ৎসা বা প্রতিকার:চিকিৎসা নির্ভর করে টেনিস এলবো'র কারণ সমূহের উপর। কারণ নির্ণয় করতে রোগীর অসুবিধার কথা শুনতে হবে, রোগীকে ভালোভাবেপরীক্ষা করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে এক্স-রে ও রক্তের পরীক্ষা (যেমন-শর্করা, সেরাম ইউরিক এসিড, আর এ ফ্যাক্টর) করা জরুরী। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেকনজারভেটিভ চিকিৎসায় রোগ সেরে যায়। তবে দু:খের বিষয় হলো, রোগ সেরে যাওয়ার কিছু দিন পর আবার দেখা দিতে পারে ।
১ .কনুই বিশ্রামে রাখতে হবে যাতে প্রদাহ কম হয়। তবে অতিরিক্ত বিশ্রামে কনুই স্টিফ হয় বা জমে যায়। ২. বরফ বা গরম সেঁকে প্রদাহ, ফুলা ও ব্যথা কম হবে। ৩. ফুলা ও ব্যথা কমে আসলে কনুই'র স্বাভাবিক নড়াচড়া ও পেশী শক্তিশালী হওয়ার ব্যয়াম করতে হবে। ৪. ননস্টেরয়ডাল এন্টিইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগ সেবনে উপসর্গলাঘব হবে। ৫. ইনজেকশন করটিসোন পুশ করলে রোগের উপসর্গ দ্রুত কমে আসবে। ৬.কখনও কখনও ফিজিকেল থেরাপির ফলে ব্যথা কমে আসে।
আর্থ্রোস্কোপিক চিকিৎসা : ইপিকোনডাইলাইটিস বা টেনিস এলবো কনজারভেটিভ চিকিৎসায় ভালো না হলে বা রোগী বার বার আক্রান্ত হলে ছোট ছিদ্র দিয়েআর্থ্রোস্কোপ কনুইয়ে প্রবেশ করিয়ে বিসঙ্কোচন ও ডেব্রাইডমেন্ট করলে ব্যথা কমে যাবে। কখনও কখনও টেনডনের উৎপত্তি নতুন জায়গায় সরানো হয় এবংএনকোর সুচার দিয়ে লাগানো হয়। এই উভয় পদ্ধতিতে রোগীর উপসর্গ দ্রুত নিরাময় হবে ।
ডাঃ জি. এম. জাহাঙ্গীর হোসেন, হাড় ও জোড়া বিশেষজ্ঞ এবং আর্থ্রোস্কোপিক সার্জন ডিজিল্যাব মেডিক্যাল সার্ভিসেস, মিরপুর, ঢাকা
Search This Blog
Sunday, April 24, 2011
টেনিস এলবো: কনুই ব্যথার একটি কারণ
Labels:
সুস্থ থাকুন
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment