Search This Blog

Friday, November 4, 2011

মাশরুমের পুষ্টিগুণ


মাশরুম হলো এক প্রকার মৃতজীবি ছাত্রাক জাতীয় উদ্ভিদ। মুলত: এরা ইধংরফরড়সুপবঃবং অথবা অংপড়সুপবঃবং শ্রেণী ভূক্ত ছত্রাক। আমাদের চারিপাশের চিরপরিচিত ব্যাঙের ছাতা আর বর্তমান মাশরুম এক জিনিস নয়। বিশ্বের প্রায় চিহ্নিত লক্ষ প্রজাতির ছত্রাকের মধ্য হতে বৈজ্ঞানিক ভাবে দীর্ঘ যাচাই-বাছাই করে যে সমস্ত ছত্রাক সম্পূর্ণ মানুষের খাওয়ার উপযোগী, নিরাপদ, পুষ্টিকর সুস্বাস্থ্য যা বিশ্বের সর্বাধুনিক পদ্ধতি টিসু্য কালচারের মাধ্যমে পন্ন বীজ দ্বারা সম্পূর্ণ পরিচ্ছন্ন পরিবেশে বিজ্ঞান সম্মত অর্গানিক উপায়ে সযত্নে চাষকৃত ছত্রাকের ফলন্ত অংশ্যই হচ্ছে মাশরুম।

ঋঅঙ
এর সূত্র মোতাবেক একজন সুস্থ্য মানুষের প্রতিদিন ২০০-৫০০ গ্রাম সবজি গ্রহণ অপরিহার্য্য। উন্নত বিশ্বের প্রতিজন প্রতিদিন ৪০০-৫০০ গ্রাম সবজি গ্রহণ করে; সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে প্রতিদিন প্রতিজনে গড়ে মাত্র ৪০-৫০ গ্রাম (আলু বাদে) সবজি গ্রহণ করার কারণে এদেশের ৮৭% লোক অপুষ্টিতে ভূগছে। এক্ষেত্রে গর্ভবতী মা, প্রসূতি মা শিশুরাই প্রধান। বর্তমান বিশ্বে প্রায় ১০০ টি দেশে মাশরুম চাষ হয়। যার ৭০% পন্ন হচ্ছে জনসমুদ্র চীনে। পাদিত মাশরুমের (৮৫%) ব্যবহূত হয় যুক্তরাষ্ট্র ৩০%, জার্মানী ১৭%, যুক্তরাজ্য ১১%, ফ্যান্স ১১%, ইটালী ১০%, কানাডা % এছাড়া থাইল্যান্ড, জাপান, মালেয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভারত প্রভৃতি দেশে খাদ্য তালিকায় এবং দৈনন্দিন খাদ্য টেবিলে অপরিহার্য্য সবজি হিসেবে ইতিমধ্যে স্থান দখল করেছে। ১৯৭৯ সালে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ থাইল্যান্ড থেকে কিছু মাশরুম বীজ এনে আসাদ গেট নার্সারীতে প্রথম পরীক্ষামূলক ভাবে চাষ শুরু করে। তার পর জাপান সরকারের সহযোগীতায় ১৯৮০ সালে একজন জাপানী বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে বিজ্ঞান ভিত্তিক ভাবে মাশরুমের জয়যাত্রা শুরু হয়।

মাশরুমের
পুষ্টিমান; (১০০ গ্রাম শুকনা মাশরুম) ১০০ গ্রাম মাশরুমে আমিষ ২৫-৩৫ গ্রাম, ভিটামিন মিনারেল ৫৭-৬০ গ্রাম, শর্করা - গ্রাম, চর্বি - গ্রাম।

প্রতি
১০০ গ্রাম আহার উপযোগী খাবারে প্রোটিনের পরিমাণ (তুলনামূলকভাবে):

১০০
গ্রাম মাংসে ২২-২৫ গ্রাম, ১০০ গ্রাম মাছে ১৬-২২ গ্রাম, ডিমে ১৩ গ্রাম, ডালে ২২-৪০ গ্রাম, মাশরুমে ২৫-৩৫ গ্রাম।

মাশরুমের
ওষুধীগুণ:

. মাশরুমের আমিষ, শর্করা, চর্বি, ভিটামিন মিনারেল এর সমন্বয় আছে। যা শরীরের 'ইমুন সিস্টেম'কে উন্নত করে। ফলে গর্ভবতী মা শিশুরা নিয়মিত মাশরুম খেলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

. মাশরুমে চর্বি শর্করা কম থাকায় এবং অাঁশ বেশি থাকায় এটি ডায়াবেটিস রোগীদের আদর্শ খাবার।

. মাশরুমে আছে শরীরের কোলেস্টেরল কমানোর অন্যতম উপাদান ইরিটাডেনিন, লোভষ্টটিন এবং এনটাডেনিন। তাই নিয়মিতহ মাশরুম খেলে হূদরোগ উচ্চরক্তচাপ নিরাময় করে।

. মাশরুমে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ভিটামিন-ডি, যা শিশুদের দাঁত হাড় গঠনে অত্যন্ত কার্যকারী।

মাশরুমে আছে প্রচুর পরিমাণে ফলিক এসিড লৌহ। ফলে মাশরুম খেলে রক্ত শূন্যতা দূর হয়। এছাড়া লিংকজাই- পদার্থ থাকায় হেপাটাইটিস বি জন্ডিসের প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করে।

. মাশরুম আছে বি-ডি গণ্ডুকেন, ল্যাম্পট্রোল, টারপিনওয়েড বেনজোপাইরিন, যা ক্যান্সার টিউমার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকার রাখে।

. মাশরুমে ট্রাইটারপিন থাকাতে, বর্তমানে এটি বিশ্বে এইডস প্রতিরোধ হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে।

. মাশরুমে ইলুডিন এম এবং এস থাকাতে আমাশয়ের জন্য বেশ উপকারী।

.মাশরুমে প্রচুর পরিমাণে গণ্ডাইকোজেন থাকাতে শক্তিবর্ধন হিসেবে কাজ করে। তাই যৌন অক্ষম রোগীদের জন্য মাশরুম একটি ওষুধ হিসাবে কাজ করে।

১০
. মাশরুমে স্ফিঙ্গলিপিড এবং ভিটামিন বি-১২ বেশি থাকায় স্নায়ুতন্ত্র স্পাইনাল কর্ড সুস্থ রাখে। তাই মাশরুম খেলে হাইপারটেনশন দূর হয় এবং মেরুদন্ড দৃঢ় রাখতে প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখে।

১১
. মাশরুমে আছে প্রচুর পরিমাণে এনজাইম, যা হজমে সহায়ক, রুচি বর্ধক পেটের পীড়া নিরাময়াক।

১২
. মাশরুমে নিউক্লিক এসিড এবং এন্টি-এলার্জেন থাকায় কিডনি রোগ এলার্জি প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করে।

কৃষিবিদ
মো: এমদাদুল হক

সুত্র: দৈনিক ইত্তেফাক (22/01/2011)


No comments:

Post a Comment