কথায় বলে-মাংসে মাংস বাড়ে, ঘৃতে বাড়ে বল, দুধে শুক্র বাড়ে, শাকে বৃদ্ধি মল। শাক খেলে মল বাড়ে। তার মানে শাক খেলে পেট পরিষ্কার হয়। আমাদের সমাজে বিত্তবানরা শাককে গরিবের খাদ্য বলে মনে করেন। তারা শাক ও সবজিকে হেলাফেলা করেন। এই পুষ্টিসমৃদ্ধ শাক না খেয়ে তিন বেলা পোলাও, বিরিয়ানি, গোশত ও ঘি'যুক্ত খাবার খেয়ে উচ্চ রক্তচাপ, হূদরোগ ও কিডনি সমস্যা ও পেটের নানা অসুখে ভোগেন। ডাক্তার যখন ওই হাই প্রোটিন ও উচ্চ মাত্রার ক্যালোরিযুক্ত খাবার বর্জন করে শাক সবজি মাছ খেতে বলেন, তখন ক্ষতি যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। তাই নিম্নে নানান শাকের গুণাগুণ বর্ণনা করা হলো:-
লালশাক :
লালশাক অত্যন্ত সহজলভ্য সস্তা শাক। ইচ্ছে করলে ছাদে বা অল্প জায়গায় লালশাকের বীজ বুনে এক মাসের মধ্যে খাওয়া যায়। টবে লাগিয়ে খাওয়া চলে। লালশাক রক্তে হিমোগেস্নাবিন বাড়ায়। যাদের রক্তস্বল্পতা বা এনিমিয়া আছে তারা নিয়মিত লালশাক খেলে রক্তস্বল্পতা পূরণ হয়। এতে লবণ বা
ক্ষারের গুণ রয়েছে।
সর্ষেশাক :
সর্ষে শাকে প্রচুর পরিমাণে আমিষ ও স্নেহ জাতীয় ভিটামিন রয়েছে। এই শাক রক্তে উপকারী এইচডিএল কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে। দেহে ভিটামিন ডি তৈরীতে
সাহায্য করে।
পালংশাক :
পালংশাককে শাকের রাজা বলা হয় শুধু এর পুষ্টিগুণের জন্য। পালংশাকের প্রধান ক্রিয়া হলো গলবস্নাডার ও কিডনির ওপর। পালংশাক খেলে জন্ডিস ভালো হয়। রক্ত বৃদ্ধি করে। রক্ত বিশুদ্ধ করে, হাড মজবুত করে। অন্ত্র সচল রাখে। ডায়াবেটিস ভালো করে। কিডনির পাথর গেলে বের করে দেয়। এতি ভিটামিন 'এ' 'বি' ও 'ই' রয়েছে। আরো আছে এসিনো অ্যাসিড।
মুলাশাক :
মুলার মতো মুলাশাকও উপকারী। মুলাশাক শরীরের মল ও মূত্র বের করে দেয়। মুলাশাকে অর্শ রোগ সারে। মুলার চেয়ে মুলাশাক বেশি উপকারী বলে পুষ্টিবিদরা বলেন। এই শাক দেহের জ্বালাপোড়া কমায়। কফ ও বাত নাশ করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
পুঁইশাক : মাছের রাজা রুই, আর শাকের রাজা পুঁই বলে গ্রামে ছড়া কাটে। পুঁইশাক শরীর ঠাণ্ডা রাখে যদিও গরম। পুঁইশাকের ডগায় বেশি ভিটামিন থাকে। বল, পুষ্টি ও বীর্য বর্ধক। সুনিদ্রা আনে, বাত পিত্তনাশক।
কচুশাক :
কচুশাক শহরে, নগরে ও গ্রামে সর্বত্র পাওয়া যায়। দামে সস্তা অথচ অত্যন্ত উপকারী। কচুশাক চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। মায়ের বুকে দুধ বৃদ্ধি করে। রক্তপিত্ত রোগ সারে। প্রস্রাবের জ্বালাযন্ত্রণা দূর করে। ক্ষুধা বাড়ায়।
No comments:
Post a Comment