থাইরয়েড একটি এন্ডেক্রাইন গস্ন্যান্ড (নোলীহীন গ্রন্থি) এটি গলার সামনের দিকে আদম'স আপেল (অফধস'ং অঢ়ঢ়ষব-শ্বাসনালীর সামনের দিকের উঁচু অংশ) এর নীচে অবস্থিত। থাইরয়েড এর প্রধানত; দুটি অংশ। ডানদিকের অংশকে বলা হয় রাইট লোব আর বামের অংশকে বলে লেফট লোব। উভয় লোব সামনের দিকে ইস্থুমাস নামক একটি ছোট অংশ দ্বারা যুক্ত থাকে। থাইরয়েড গস্ন্যান্ড এর ওজন প্রায় ২৫ গ্রাম। মহিলাদের ক্ষেত্রে ওজন সাধারণত কিছুটা বেশী হয়।
থাইরয়েড গস্ন্যান্ড মূলত: দু'টি হরমোন তৈরী করে থাকে। এগুলো হলো ঞ৪ এবং ঞ৩. এই হরমোনগুলো থাইরয়েড হতে নি:সৃত হয়ে সরাসরি রক্তে গিয়ে মিশে এবং রক্তের মাধ্যমে দেহের সকল কোষে পেঁৗছায়। থাইরয়েড হরমোন কোষের মেটাবলিজম (বিপাক ক্রিয়া) নিয়ন্ত্রণ করে, ফলে থাইরয়েড হরমোন এর সমস্যার কারণে সকল শারীর বৃত্তীয় কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ হয়।
থাইরয়েড হরমোন তৈরী এবং নি:সরণের জন্য কাঁচামাল হিসাবে আয়োডিন ব্যবহূত হয়। সামুদ্রিক মাছ, সামুদ্রিক লতাগুল্ম, দুধ, শষ্য, বৃষ্টির পানি এবং মাটিতে আয়োডিন থাকে। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের জন্য খুব সামান্য অর্থাৎ দৈনিক মাত্র ১৫০ মাইক্রোগ্রাম আয়োডিন প্রয়োজন। গর্ভবতী মহিলার জন্য ১৭৫ মাইক্রোগ্রাম এবং যে মহিলা বা মাকে বুকের দুধ খাওয়ান তার জন্য দৈনিক ২০০ মাইক্রোগ্রাম আয়োডিন প্রয়োজন হয়।
আয়োডিনের অভাবে থাইরয়েড গস্ন্যান্ড বড় হয়ে যায়। একে গয়টার বা গলগন্ড এবং স্থানীয় ভাষায় ঘ্যাগ বলা হয়। আমাদের দেশের উত্তরাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকা যেমন; বৃহত্তর রংপুর, ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর প্রভূতি জেলার আয়োডিনের অভাব রয়েছে। পূর্বে এসব এলাকায় আয়োডিনের অভাবজনিত গলগন্ড (এনডেমিক গয়টার) রোগের প্রাদুর্ভাব ছিল। বর্তমানে সরকারের আয়োডিনেশন প্রোগ্রামের ফলে লবণ কোম্পানীগুলো আয়োডিনযুক্ত প্যাকেটজাত লবণ তৈরী করে থাকে। ফলশ্রুতিতে এনডেমিক গয়টার রোগের প্রাদুর্ভাব অনেকটাই কমেছে। যদিও এখনও খোলা বাজারে আয়োডিন ছাড়া লবণ পাওয়া যায়। এমনকি প্যাকেটজাত সব লবণে সঠিক মাত্রায় আয়োডিন আছে কিনা সে ব্যাপারেও সংশয় রয়েছে।
আয়োডিনের অভাবে প্রয়োজনীয় পরিমাণ থাইরয়েড হরমোন নি:সরণ সর্বদা সম্ভবপর হয় না। ফলে হরমোনের অভাবজনিত বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। যেমন; গলগন্ড, ওজন বেড়ে যাওয়া, বন্ধ্যাত্ব থেকে শুরু কর হূৎপিন্ড, অস্থি, মাংস, চর্ম যৌন ও রক্তের নানা বিধ সমস্যা। থাইরয়েড হরমোনের অভাবে শিশুর শারীরিক এবং মস্তিষ্কের বিকাশ বাধাগ্রস্থ হয়। ফলে শিশু হাবা-গোবা ও বামন হয় অর্থাৎ শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী হয়। এমনকি গর্ভাবস্থায় মায়ের থাইরয়েড হরমোনের স্বল্পতা থাকলে গর্ভস্থ শিশুও একই সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারে। চিকিৎসা শাস্ত্রে পুরনো একটা কথা প্রচলিত আছে, 'সামান্য একটু আয়োডিন, একজন হাবা এবং একজন আইনস্টাইন এর মধ্যে পার্থক্য গড়ে দিতে পারে।" তাই শরীরে আয়োডিন তথা থাইরয়েড হরমোনের অভাবজনিত সমস্যা আছে কিনা, তা অবশ্যই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় মায়ের এবং জন্মের পর পরই শিশুর থাইরয়েড স্ক্রিনিং করা প্রয়োজন। সমস্যা ধরা পড়লে সাথে সাথে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। যদি জন্মের ১ মাসের মধ্যে চিকিৎসা শুরু করা না যায়, তবে মস্তিষ্কের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি পরিবার, সমাজ ও জাতির কাম্য নয় বরং বোঝা স্বরূপ। আমরা চাই সুস্থ, সবল ও বুদ্ধিমান ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। তাই প্রয়োজন শুধুমাত্র একটু সচেতনতা।
ডা : এ, এইচ, এম, শহীদুল ইসলাম
সহযোগী অধ্যাপক (এক্স)
বঙ্গবন্ধু শেষ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়
চীফ কনসালটেন্ট
থাইরয়েড ক্লিনিক, গ্রীন রোড, ঢাকা।
আমি আন্তরা,আমি বিবাহিত, আমার ত্তজন ৬৮কেজি,উচ্চতা ৫ফুট ২ইঞ্ছ ।আমার blood test report হলো
ReplyDeletetsh 6.53uIU/ml,prolactin 18.3o,,,blood group '0'.haemoglobin 11.0,,,আমার প্রশ্ন হল কি ভাবে আমি ওজন কামাব?আমার মাসিক অনিয়মিত। আমি কিরকম ভাবে এর থেকে রেহাই পাব?আমার থাইরয়েড কি খুব বেসি......plz help me.