Search This Blog

Sunday, August 7, 2011

আউটসোর্সিং এ বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের বর্তমান অবস্থা (জরিপের ফলাফল)

এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। পড়ালেখা শেষ করে পূর্ণকালীন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে অনেকেই আত্মপ্রকাশ করছেন। ফ্রিল্যান্সিং এর সবচেয়ে ভাল দিক হচছে পড়ালেখা শেষ করে একটা চাকুরীর জন্য বসে থাকতে হয় না। ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে স্বল্প পুঁজিতে অনায়াসে একটি প্রতিষ্ঠান দাড় করানো যায়। জন্য দরকার কয়েকটি কম্পিউটার, ইন্টারনেট সংযোগ এবং আইটিতে দক্ষ জনবল, যা প্রতিবছরই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বের হচ্ছে।
দক্ষতার দিক থেকে বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সাররা অন্যান্য দেশ থেকে খুব একটা পিছিয়ে নেই। সম্প্রতি জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস ওডেস্ক (www.oDesk.com) এর এক জরিপে দেখা যায় অনলাইন কর্মীদের শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তমে রয়েছে। নিয়ে "প্রথম আলো"-তে গত ১০ই মার্চ একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়, যা আমাদের দেশের জন্য সত্যি একটি ভাল খবর। বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সাররা মূলত ওডেস্ক, গেট--ফ্রিল্যান্সার এবং রেন্ট--কোডার এই তিনটি মার্কেটপ্লেসে বেশি কাজ করে থাকেন। এসব সাইটে বাংলাদেশীদের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছেন এরকম কয়েকজন ফ্রিল্যান্সারদের প্রোফাইল এই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হল। পাশাপাশি বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের অবস্থা জানার জন্য অনলাইনে "কম্পিউটার জগৎ" এর পক্ষ থেকে একটি জরিপের আয়োজন করা হয়েছে, যার প্রাথমিক ফলাফল বিশ্লেষণ করা হল।

ওডেস্ক:
এই মার্কেটপ্লেসে প্রায় দুই লক্ষ সাতাশ হাজার প্রোভাইডার বা ফ্রিল্যান্সার রয়েছে। সাইটে "বাংলাদেশ" লিখে সার্চ করে প্রায় সাড়ে আট হাজার ফ্রিল্যান্সারকে পাওয়া যায়। এই ফলাফলকে সবচেয়ে বেশি ঘন্টা কাজ করছেন সে হিসেবে সাজালে প্রথম অবস্থানে আসেন "মিনহাজ" নামক একজন বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সার। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পর্যন্ত ওডেস্কে মোট হাজারেরও বেশি ঘন্টা কাজ করেছেন। পেশায় তিনি একজন ইংরেজী শিক্ষক এবং একজন কম্পিউটার প্রশিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পরে তা বাদ দিয়ে ফ্রিল্যান্সিংকেই মূল পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছেন। তিনি মূলত ডাটা এন্ট্রি, গ্রাফিক্স ডিজাইন এবং প্রোগ্রামিং করে থাকেন। ওডেস্কে তিনি ২৩টি কাজ করছেন যা থেকে প্রায় ২৩ হাজার ডলার আয় করেছেন। তালিকার দশম স্থানে "সালেহা আক্তার" নামক একজন নারী ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন। তিনি মূলত ডাটা এন্ট্রি নির্ভর কাজ করে থাকেন। তিনি এপর্যন্ত ,৭০০ ঘন্টার উপর কাজ করে পাঁচ হাজার ডলারের উপর আয় করেছেন।

গেট--ফ্রিল্যান্সার:
সম্প্রতি এই সাইটের নাম পরিবর্তন করে "ফ্রিল্যান্সার" রাখা হয়েছে এবং নতুন ঠিকানা হচ্ছে www.freelancer.com এই সাইটে সাড়ে তেইশ হাজার বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন। এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে "ডাটা ড্রিম লি:" নামক একটি আউটসোর্সিং কাজ নির্ভর প্রতিষ্ঠান যাতে ২০ জন আইটি প্রফেশনাল কর্মরত রয়েছেন। এই প্রতিষ্ঠানটি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, গেম ডেভেলপমেন্ট, ডাটা এন্ট্রি, ডাটা প্রসেসিং এবং অনলাইন মার্কেটিং এর কাজ করে থাকে ২০০৮ সালের শেষের দিকে এই সাইটে যোগ দিয়ে পর্যন্ত ২০০ টির অধিক প্রজেক্ট সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। বাংলাদেশীদের তালিকায় ৫ম স্থানে রয়েছেন "সায়মা" নামক একজন ফ্রিল্যান্সার। তিনি মূলত বিভিন্ন ওয়েবসাইট এবং ব্লগের জন্য আর্টিকেল লিখে থাকেন। এই সাইটে তিনি ২০০৮ থেকে পর্যন্ত ১৮১ টি প্রজেক্ট সম্পন্ন করেছেন।

রেন্ট--কোডার:
এই সাইটে (www.RentACoder.com) প্রায় হাজার বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সার কাজ করেন। এদের মধ্যে ১০০টি অধিক কাজ করেছেন এরকম ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন ১৯ জন। এই তালিকার প্রথম স্থানে রয়েছেন "shayanto_03" নামক একজন ফ্রিল্যান্সার। যিনি রেন্ট--কোডারের দুই লক্ষ আশি হাজার ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে ২৫৫তম স্থানে রয়েছেন। ২০০৫ সালে সাইটে যোগ দিয়ে পর্যন্ত ৪০০ টির অধিক কাজ সম্পন্ন করেছেন। তিনি ওয়েব প্রোগ্রামিং এবং ওয়েব ডিজাইনের কাজ করে থাকেন। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে "মুক্ত সফটওয়্যার" নামক একটি প্রতিষ্ঠান যা রেন্ট--কোডারের রেংকিং ২৭৭তম স্থানে রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানটি ২০০৬ সাল থেকে পর্যন্ত ৩৮৫টি প্রজেক্ট সমাপ্ত করেছে। এই প্রতিষ্ঠানটি মোবাইল এপ্লিকেশন ভেলপমেন্ট, ওয়েব এপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব সার্চ নির্ভর কাজ করে থাকে।

ফ্রিল্যান্সারদের নিয়ে জরিপ

বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সাররা কে কিরকম কাজ করছেন তা জানার জন্য নতুন অভিজ্ঞ সকল ফ্রিল্যান্সারদেরকে "কম্পিউটার জগৎ" এর পক্ষ থেকে একটি জরিপে অংশগ্রহণ করার আহ্ব করা হয়েছিল। আহ্বানে সাড়া দিয়ে গত ২৬ শে মার্চ পর্যন্ত ৪৬ জন ফ্রিল্যান্সার জরিপে অংশগ্রহণ করেছেন। যদিও এই সংখ্যা বাংলাদেশী মোট ফ্রিল্যান্সারদের তুলনায় অনেক কম, কিন্তু তা থেকে আমাদের দেশী ফ্রিল্যান্সারদের অবস্থা সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যায়। জরিপে ফ্রিলযান্সারদেরকে কয়েকটি প্রশ্ন করা হয়েছিল এবং ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং সম্পর্কে তাদের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল।

জরিপের ফলাফল বিশ্লেষণ

জরিপে যেসব বিষয় জানতে চাওয়া হয়েছিল সেগুলো হল -

প্রশ্ন: আপনার পেশা
পূর্ণকালীন ফ্রিল্যান্সার

৩৫%
চাকুরীজীবি
১৫%
ব্যবসায়ী
%
শিক্ষার্থী
৩৯%
গৃহিণী
%


থেকে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফ্রিল্যান্সিং করার চাহিদা সবচেয়ে বেশি। অনেকেই পড়ালেখা শেষ করে চাকুরী বা ব্যবসা না করে ফ্রিল্যান্সিংকেই মূল পেশা হিসেবে গ্রহণ করছেন।


প্রশ্ন: ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে প্রথম কিভাবে জানতে পেরেছিলেন?
"কম্পিউটার জগৎ" ম্যাগাজিন থেকে

২৪%
সংবাদপত্র থেকে
%
ইন্টারনেটে থেকে
২২%
বন্ধুর মাধ্যমে
২৮%
অন্যান্য
২০%


ফ্রিল্যান্সিংকে জনপ্রিয় করতে "কম্পিউটার জগৎ" এর ভূমিকা সহজেই এই জরিপ থেকে অনুধাবণ করা যায়।

প্রশ্ন: আপনি কোন সাল থেকে ফ্রিল্যান্সিং এর সাথে জড়িত?
২০১০

২৮%
২০০৯
৫০%
২০০৮
১৫%
২০০৭
%
২০০৬
%
২০০৫
%


প্রকৃত পক্ষে ২০০৮ সাল থেকে ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং আমাদের দেশে জনপ্রিয় হতে শুরু করে। ২০১০ সালে এই সেক্টরে নতুনরা যে আর বেশি পরিমাণে যুক্ত হবে তা প্রথম কয়েক মাসের চিত্র (২৮%) থেকেই বোঝা যায়।

প্রশ্ন: আপনি কোন ধরনের কাজগুলো করে থাকেন?
ওয়েবসাইট তৈরি

৪১%
ওয়েবসাইট টেম্পলেট ডিজাইন
৩৫%
গ্রাফিক্স ডিজাইন
৩৫%
প্রোগ্রামিং
২০%
ডাটা এন্ট্রি
৫৪%
এনিমেশন তৈরি
%
গেমস তৈরি
%
অন্যান্য
৫৭%




এই প্রশ্নটিতে একাধিক উত্তর নির্ধারণের সুযোগ ছিল। তাই মোট শতাংশ ১০০% এর অধিক। এতে দেখা যায় ডাটা এন্ট্রি ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। তারপরের অবস্থানে রয়েছেন ওয়েবসাইট ডেভেলপাররা।


প্রশ্ন: আপনি কোন কোন মার্কেটপ্লেসে নিয়মিত কাজ করে থাকেন?
ওডেস্ক

৪৬%
গেট--ফ্রিল্যান্সার
৪৩%
রেন্ট--কোডার
৩০%
গেট--কোডার
%
স্ক্রিপ্টল্যান্স
%
মাইক্রোওয়ার্কস
১৩%
থিমফরেস্ট (এনভাটো)
%
জুমল্যান্সার্স
%
সরাসরি ক্লায়েন্ট থেকে
২৬%
অন্যান্য
৩৫%



এই প্রশ্নটিতেও একাধিক উত্তর নির্ধারণের সুযোগ ছিল। ওডেস্ক, রেন্ট--কোডার, গেট--ফ্রিল্যান্স এর পাশাপাশি সরাসরি ক্লায়েন্টের কাছ থেকে কাজ পেয়ে থাকেন এমন ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যাও অনেক। এক্ষেত্রে আমাদের দেশে পেপাল (Paypal) চালু থাকলে আরও অনেক বেশি বৈদেশিক মূদ্রা আয় করা যেত। কারণ পেপালে লেনদেনের খরচ অত্যন্ত কম হওয়ায় বেশিরভাগ ক্লায়েন্ট পেপালের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করতে চায়।


প্রশ্ন: মার্কেটপ্লেস থেকে পর্যন্ত আপনি কতটি কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন?
একটিও নয়

৩৫%
- টি
২২%
- ১০ টি
১১%
১১ - ৫০ টি
১১%
৫১ - ১০০ টি
%
১০০টির অধিক
%


এই জরিপে যারা অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদের একটি বড় অংশ এখনও কোন কাজ পাননি। তাই বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের প্রকৃত চিত্র পেতে অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সারদেরকে এই জরিপে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো যাচ্ছে।

প্রশ্ন: প্রথম কাজ পেতে আপনার কত সময় লেগেছিল?
এখনও কোন কাজ পাইনি

৩৫%
সপ্তাহ থেকে কম
%
থেকে সপ্তাহ
%
মাসের মধ্যে
২০%
থেকে মাস
১৩%
থেকে মাস
%
মাসের থেকে বেশি সময়
%


প্রথম কাজ পেতে কত সময় লাগতে পারে তা বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে কাজে দক্ষতা, ইংরেজিতে সাবলীলভাবে যোগাযোগের বৈশিষ্ট্য এবং কোন ধরনের প্রজেক্টে বিড (Bid) করছেন তার উপর। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় এক মাস মধ্যেই প্রথম কাজ পাওয়া যায়।


প্রশ্ন: অর্থ উত্তোলনের জন্য আপনি কোন কোন পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করে থাকেন?
পেওনার মাস্টারকার্ড

৩৮%
মানিবুকার্স
৪৮%
পেপাল
১৭%
ব্যাংক ওয়্যার ট্রান্সফার
১৪%
চেকের মাধ্যমে
১৪%
ওয়েস্টার্ণ ইউনিয়ন
১২%
এলার্টপে
১২%
অন্যান্য
২৯%




অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সাররা একাধিক পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন। আমাদের দেশে জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে মানিবকার্স এবং পেওনার ডেবিট মাস্টারকার্ড। পেপালের সার্ভিস আমাদের দেশে না থাকলেও অনেকে বিদেশে অবস্থিত বন্ধু-বান্ধব বা আত্বীয়সজনের মাধ্যমে এটি ব্যবহার করছেন।


জরিপে আর দুটি ঐচ্ছিক প্রশ্ন ছিল। একটি হচ্ছে প্রথম কাজে কত ডলার বিড করেছিলেন? এক্ষেত্রে দেখা যায় বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সাররা ২০ থেকে ৫০ ডলারের কাজের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন। কয়েকজন আবার প্রথম প্রজেক্টে ২০০ থেকে ৪০০ ডলার পেয়েছিলেন। একজন ফ্রিল্যান্সার প্রথম প্রজেক্টেই ৯৫০ ডলার পেয়েছিলেন। দ্বিতীয় প্রশ্নটি ছিল পর্যন্ত আনুমানিক মোট কত ডলার আয় করেছেন। এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন ১৯ জন। এদের মধ্যে জন ,০০০ থেকে ,০০০ ডলার আয় করেছেন। এদের মধ্যে জন রয়েছেন যারা ২০ হাজার ডলারের উপর আয় করেছেন।

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মতামত

এই জরিপে অংশগ্রহণকারী ফ্রিল্যান্সাররা প্রত্যেকে তাদের মতামত দিয়েছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি প্রকাশ করা হল।

সুপ্রিয় রঞ্জণ নাথ
শিক্ষার্থী, ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়
অর্থ উত্তোলনের যে প্রচন্ড ঝামেলা পোহাতে হয় তা রয়েই গেল। সরকারের এই বিষয়ে কোন মাথা ব্যাথা নেই যা খুব আপসোসের বিষয়। তবে আমার একটি প্রস্তাব আমাদের দেশেই একটি নিজস্ব মার্কেটপ্লেস তৈরী হোক।যেখানে আমরা নিজেরাই নিজের দেশের মার্কেটপ্লেসে কাজ করে অর্থ আয় করতে পারি।এই বিষয়টি ভাবলে মনে হয় ভাল হবে।

রবিউল ইসলাম
পূর্ণকালীন ফ্রিল্যান্সার, শিরোমণি, খুলনা
আমি একজন প্রফেসনাল ফ্রিল্যান্সার। আমি মনে করি এটি খুব আনন্দদায়ক এবং উপভোগ্য কাজ। ওডেস্কে আলফাডিজিটাল নামে আমাদের একটি টিম আছে যা ওডেস্কে আমাদের দেশের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে। আমাদের টিম মেম্বাররা খুব দক্ষ এবং আমরা যে কোন ধরনের কাজ করতে পারি।

মিথুন
পূর্ণকালীন ফ্রিল্যান্সার, নাখাল
সত্যি কথা বলতে কি আমি প্রথম এই সম্পর্কে জানতে পারি জাকারিয়া ভাইয়ের কম্পিউটার জগতে লেখার মাধ্যমে। আমার প্রথম কাজ পেতে প্রায় মাস সময় লেগেছিল। সময়টা অনেক বেশি হলেও এই সময়ের মাঝে নিজেকে তৈরী করতে ব্যয় করেছিলাম। আমারদের অনেক বেশি প্রস্তুতি নেবার প্রয়োজন আছে।আর সব চেয়ে বেশি যেটার দরকার আমাদের নিয়মিত ইংরেজী চর্চা করা।

আবু সাইদ মোহাম্মাদ সায়েম
পূর্ণকালীন ফ্রিল্যান্সার, রাজপাড়া, রাজশাহী
আমি রাজশাহীতে একটি Writing and Web Development Firm করতে চাই। আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো আগ্রহ এবং ধৈর্য্যের অভাব। আমার মনে হয় জন্য আমাদেরকে ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে প্রচার আরো বেশী প্রয়োজন এবং ফ্রি সেমিনার এর মাধ্যমে সচেতনতা আর উদ্বুদ্ধকরণের মত কাজ করলে আমরা আমাদের এই সেক্টরটিতে মানবসম্পদ উন্নয়ন করতে পারি। আমি ব্যক্তিগত ভাবে এখন সত্যিই যোগ্য লোকের প্রয়োজন অনুভব করছি আমার টিমের জন্য।

মহসিনুল আলম
পূর্ণকালীন ফ্রিল্যান্সার, কাফুরিয়া, নাটোর
সবার আগে প্রয়োজন ইংরেজী ভালভাবে জানা। তাতে বিশেষ করে ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগ করতে অন সুবিধা হয়। কারণ আমি প্রথম দিকে বুঝতে পারতাম না বায়ার আসলে কি চায়। তাতে প্রায় পাওয়া প্রজেক্টগুলো হাতছাড়া হয়ে যেত। এখনো এধরনের সমস্যা কিছু কিছু মোকাবেলা করতে হয়। আর কাজ শুরু করার পূর্বে নিজের আত্মবিশ্বাস সম্পর্কে বায়ারকে অবহিত করতে হবে। যেন বায়ার কাজটি নির্ভরতার সহিত দেয়। আমি ফ্রিল্যান্স জগতে প্রতিষ্ঠিত হতে চাই। তাই ওয়েব ডেভেলপমেন্টের কাজ শিখছি। কারণ আস্তে আস্তে ওয়েবের জগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

অলি জামান
শিক্ষার্থী, বগুড়া
আমাদের দেশে পেপাল চালু হওয়া উচিত। অনেক ক্লায়েন্ট এই কারণে প্রজেক্ট বাতিল করে দেয়, কারণ তারশুধু পেপালের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করতে চায়।

রাসেল
গেন্ডারিয়া
আউটসোর্সিং কাজে বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের ভবিষ্যঅনেক ভাল। কিন্তু এর জন্য আরও অনেক কাজ করতে হবে। আমাদের দেশ থেকে ভারতে এই ধরনের কাজ অনেক বেশী হয়। ওদের কারণে এই কাজ এর টাকা অনেক কমে গিয়েছে। আমার মনে হয় আমরা যদি র্ফামের মাধ্যমে এই কাজ করি, তাহলে সম্পুর্ণ প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করা যাবে। এবং এই আউটসোর্সিং যারা কাজ করে তাদের নিয়ে একটা সংগঠন করতে হবে।

কাজী আব্দুল্লাহ আল মামুন (সুমন)
চাকুরীজীবি, ঢাকা
চাকুরীর পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং একটি ভাল প্র্যাক্টিস। এটি টেকনিক্যাল দক্ষতা বৃদ্ধি করে। সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি করে যোগাযোগের দক্ষতা এবং ধারণাগত দক্ষতা।

মোহাম্মাদ লিটন
পূর্ণকালীন ফ্রিল্যান্সার, মিরপুর ঢাকা
সকল বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সার চায় পেপাল আমাদের দেশে চালু হোক। এতঅর্থ লেনদেন খুব সহজ এবং খরচ অত্যন্ত কম। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে কিছু কিছু ক্লায়েন্স শুধুমাত্র পেপালের মাধ্যমে লেনদেন করতে চায়। তাই বাংলাদেশী সকল ফ্লিল্যান্সার চায় আমাদের সরকার এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবে।

মো:রেজওয়ানুল আলম
শিক্ষার্থী, মওলানা ভাসানী হল, জা.বি
আমি কিছুদিন হল ওয়েব ডেভলপমেন্ট শিখলাম, এখন প্রাতিষ্ঠানিক পরীক্ষার কারনে ফ্রিল্যান্সিং বন্ধ আছে।মে/জুন থেকে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি পার্টটাইম ওয়েব ডেভলপার হিসেবে চাকরি নাকি ফ্রিল্যান্সিং করব।উল্লেখ্য আমি ওয়েব ডেভলপমেন্টের কাজ শেখার আগে সরাসরি একটি ডেটা এন্ট্রির কাজ পেয়ে শুরু করেছিলাম গেট--ফ্রিল্যান্সার সাইট থেকে।একঘেয়েমি আর নেট স্পিডের অপ্রতুলতার কারণে কয়েকদিন করেই বাদ দিয়েছি। টাকা হাতে পাবার নিশ্চয়তার ব্যাপারে সরকারী উদ্যোগ থাকলে এর প্রসার কয়েকগুণ হবে বলে আমার ধারণা।বর্তমানে যেসব পদ্ধতিতে টাকা বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা টাকা তুলছেন তাদের বিভিন্ন ফি পরিশোধ করতে অনেক টাকা গুনতে হয়।সরকারকে ফ্রিল্যান্সিং সামান্য সরকারী সহযোগিতার মাধ্যমে কত লক্ষ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান এবং কোটি কোটি ডলার আয় সম্ভব তা বুঝতে হবে।
ত্রিভুজ
ব্যবসায়ী, উত্তরা, ঢাকা
আউটসোর্সিনিয়ে এই দেশে আরো প্রচুর প্রচার হওয়া প্রয়োজন। এর জন্য প্রচুর ওয়ার্কশপ আর সেমিনার করা দরকার। সরকারের তরফ থেকেও ফ্রিল্যান্সারদের সহযোগীতা কাজ সহজ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরী। বিশেষ করে বিদেশ থেকে টাকা আনার বিষয়টা। যেমন পে-প্যাল বাংলাদেশ থেকে ব্যবহার করা যায় না। রিমোট ডেস্কটপে লগইন করে সেখান থেকে ব্যবহার করতে হয়। তারপর শেষ পর্যন্ত আবার সাধারণ ব্যাংকের মাধ্যমে সেটা আনতে হয়। এত ঝামেলা অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয় না। সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করলে এসব সমস্যা মিটতে পারে। দেশে ইন্টারনেট সহজলভ্য করা অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম চালু করা উচিত শীঘ্রই। এতে অনেকেই ইকমার্স এবং অনলাইনভিত্তিক সার্ভিস ডেভেলপমেন্টে আগ্রহী হবে এবং সেখান থেকে আমরা অনেক ফ্রিল্যান্সার পাবো।
শাহরিয়ার জাহান
পূর্ণকালীন ফ্রিল্যান্সার, উপশহর, রাজশাহী
টাকা আসবার পর ব্যাংকে কিছু জটিলতার সম্মুখিন হয়েছি। শুধু ফ্রিল্যান্স কাজে নয়, আইটি নিয়েই দেশে কেন্দ্রীয় পরিকল্পনার খুব অভাব অনুভব করি। বিশ্ববাজারে আরো ভালো অবস্থানের জন্য আইট বিশেষজ্ঞ উদ্যোক্তাদের অনেক বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। ইন্টারনেটের খরচের তুলনায় স্পিড এখনো অনেক কম, সেই সাথে বিদ্যূবিভ্রাট আমাদেরকে অনেক পিছিয়ে রাখছে। সরকারী ভাবে ফ্রিল্যান্সারদের একত্রিত করে কাজ করাবার উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। এটা আউটসোর্সিং-কে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেবে, এবং দেশ বৈদেশিক মূদ্রা আয় করে উপকৃত হবে।

এই জরিপের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারা কোন কোন ধরনের কাজ করছেন এবং ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে তাদের মতামত জানা। থেকে নতুন ফ্রিল্যান্সাররা একটি দিক নির্দেশনা পাবে। তাই এই জরিপে যত বেশি সংখ্যক ফ্রিল্যান্সার অংশগ্রহণ করবে তত ভালভাবে বিষয়গুলো জানা যাবে। এজন্য সকল ফ্রিল্যান্সারদেরকে http://tinyurl.com/bdfreelancer লিংকে গিয়ে জরিপে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানানো হচ্ছে। জরিপের পূর্ণাঙ্গ ফলাফল পরবর্তীতে "কম্পিউটার জগৎ" এর মাধ্যমে জানানো হবে

No comments:

Post a Comment